,

মাধবপুরে ফোনেই মিলছে মরণ নেশা মাদকের থাবায় বাড়ছে চুরি ছিনতাই

হামিদুর রহমান, মাধবপুর : মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। সরকারের এই জিরো টলারেন্স থাকার পরেও হাত বাড়ালেই মিলছে সর্বনাশা ইয়াবাসহ সকল মাদকদ্রব্য। আবার ঈদ কে সামনে রেখে এই মাদক যেন আরো সহজলভ্য হয়েছে। মাধবপুরের যুবসমাজের বড় একটি অংশ মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছে। শুধু মাদকের টাকা জোগাড় করতে নেশায় আসক্ত এসব যুবক জড়িয়ে পড়ছে চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে। সম্প্রতি চুরি, ছিনতাই, হামলাসহ নানা ধরনের অপরাধ বেড়ে যাওয়ার মূলে রয়েছে মাদক ব্যবসা ও সেবন। গ্রামগঞ্জে প্রায়ই ঘটছে দিনদুপুরে চুরির ঘটনা। দিনকে দিন অবস্থা ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় আছেন অভিভাবকরা। তাদের অনেকেই নেশায় আসক্ত সন্তানদের সুপথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন।
এলাকায় হঠাৎ মাদক উদ্ধার এবং মাদক ব্যবসায়ী আটক না হওয়ায় নিয়ে এখানকার সচেতন মানুষ শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
চৌমুহনী, ধর্মঘর সীমান্তের ওপার থেকে ঈদকে সামনে রেখে এখন বিভিন্ন পণ্যের সঙ্গে ওপার থেকে মদ, গাজাঁ, ইয়াবা মাদকব্যবসায়ীরা নিয়ে আসছে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সন্ধ্যা নামলেই মাদকের আড্ডা বসে সীমান্তবর্তী মাধবপুর উপজেলার দক্ষিণাঞ্চালের ধর্মঘর ইউনিয়নের শিয়ালউড়ি, আলীনগর, দেবপুর, কালিকাপুর, হরষপুরস্টেশন, বিজয়নগরসহ চৌমুহনী ইউনিয়নের তুলশীপুর, রামনগর, হরিণখোলা, কমলপুর, নয়নপুর, বড়জ্বালা বাজার, চৌমুহনী বাজার, বহরা ইউনিয়নের শ্রীধরপুর, মনতলা স্টেশনবাজার, দূর্গানগর, শাহজাহানপুরের লোহাইদ, বনগাওঁ, চা বাগানগুলোসহ বিভিন্ন এলাকায় একাধিক মাদক কারবারি প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা করছে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা কৌশলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তরুণদের মাঝে বিভিন্ন ধরনের মরণ নেশা পৌঁছে দিচ্ছে। মাদক সেবন করে উঠতি বয়সী কিশোররা বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত হচ্ছে, কিশোর গ্যাং নামে আত্মপ্রকাশ ঘটছে অপরাধী চক্রের। কিছু অসাধু ও মতাধর ব্যক্তিও সক্রিয়ভাবে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এ কারণে তারা থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে। এসব মাদক কারবারি ও সেবনকারী রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা ও সেবন করে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা বলছেন, পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জরুরী ভিত্তিত্বে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। মাদক সিন্ডিকেট শিকড় থেকে উপড়ে ফেলতে হবে। তা না হলে সমাজে এই মাদকের ভয়াল থাবা থেকে কেউই নিরাপদ নয়।
নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক একজন অভিভাবক বলেন, আমার ছোট ছেলে রহিম (ছদ্মনাম) মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। তাকে নিয়ে আমি ও আমার স্ত্রী খুবই বিপদে আছি। ঘরের একটা জিনিসও নেই। ওই ছেলে সব বিক্রি করে ফেলেছে। কিছু বলতে গেলেই তেড়ে আসে মারপিট করতে।
এ বিষয়ে জন্য কথা হয় মাধবপুর থানার ওসি রাকিবুল ইসলাম খান এর সঙ্গে। তিনি বলেন, মাদক নির্মূলে আমার থানার প্রতিটি অফিসার কাজ করে যাচ্ছেন। কোনোভাবেই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না।
সরাইল-২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্ণেল সৈয়দ আরমান আরিফ বলেন, এই এলাকায় মাদক প্রতিরোধে বিজিবি জিরো টলারেন্স। ঈদকে সামনে রেখে যাতে মাদক ব্যবসায়ীরা ওপার থেকে যাতে এপারে মাদকদ্রব্য না আনতে পারে সে জন্য সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত টহলের পাশাপাশি বিজিবির বিশেষ টিম মোতায়েন রয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর